Last Update : August 15, 2023
শত্রবোহপি হিতায়ৈব বিবদন্ত পরস্পরম তাৎপর্য
(প্রশ্ন) “शत्रवोऽपि हितायैव विवदन्तः परस्परम्”–উৎস নির্দেশ করো। শ্লোকটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
ভূমিকা
আলোচ্য অংশটি বিষ্ণুশর্মা বিরচিত ‘পঞ্চতন্ত্রে’র ‘কাকোলুকীয়’ নামক তন্ত্রের অন্তর্গত ‘ব্রাক্ষ্মণচৌরপিশাচকথা’ নামক গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
তাৎপর্য বিশ্লেষণ
দ্রোণ নামক কোনো এক দরিদ্র ব্রাহ্মণকে কোনো একজন যজমান দয়াপরবশ হয়ে দুটি বাছুর দান করেছিল। সেই বাছুর দুটিকে দ্রোণ লোকের কাছে চেয়েচিন্তে তেল-ঘি-যব দিয়ে লালনপালন করে হৃষ্টপুষ্ট করে বড়ো করে তুলেছিলেন।
তারা হৃষ্টপুষ্ট হলে ক্রূরকর্মা নামে কোনো এক চোর গোরু দুটিকে দেখতে পেয়ে চুরি করা মনস্থ করে। সেই অনুযায়ী চুরি করতে আসার সময় পথে সত্যবচন নামে এক ব্রহ্মদৈত্যের সঙ্গে ক্রূরকর্মার দেখা হয়। উভয়ে উভয়ের কথা শুনে স্থির করে যে, ক্রূরকর্মা ব্রাহ্মণের গোরু দুটি চুরি করবে, আর ব্রহ্মদৈত্য ব্রাহ্মণকে খাবে। এই সঙ্কল্প স্থির করে তারা ব্রাহ্মণের বাড়িতে গেল।
চোর চুরি করতে গেলে ব্রহ্মদৈত্য বলল যে আগে সে ব্রাহ্মণকে খাবে, তারপর চোর চুরি করবে। আর চোর বলল যে, আগে সে চুরি করবে, তারপর ব্রাহ্মণকে ব্রহ্মদৈত্য আহার করবে। এই নিয়ে তাদের মধ্যে বচসা বেধে যাওয়ার শব্দে ব্রাহ্মণের ঘুম ভেঙে গেল। ব্রাহ্মণকে জেগে উঠতে দেখে চোর বলল যে, ব্রহ্মদৈত্য ব্রাহ্মণকে খেতে এসেছে। আর ব্রহ্মদৈত্য বলল যে, চোর তাঁর গোরু দুটি চুরি করতে এসেছে। তখন ব্রাহ্মণ ইষ্টমন্ত্র স্মরণ করে ব্রহ্মদৈত্যের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করল। আর লাঠি দিয়ে মেরে চোরকে তাড়ালেন।
এখানে দেখা যাচ্ছে যে, গোরু চুরি করতে এসে ব্রাহ্মণের প্রাণনাশের আশংকার কথা তাঁকে জানিয়ে দিয়ে চোর ব্রাহ্মণের প্রাণ বাঁচিয়ে দিল। আর অন্যদিকে ব্রহ্মদৈত্যও ব্রাহ্মণকে খেতে এসে চোরের সঙ্গে বিবাদে লিপ্ত হয়ে চুরিতে বাধা দেবার উদ্দেশ্যে ব্রাহ্মণকে গোরু চুরির কথা জানিয়ে দিল। তখন ব্রাহ্মণই লাঠি দিয়ে মেরে চোরকে তাড়িয়ে গোরু দুটিকে রক্ষা করে। এ ক্ষেত্রে তাই দেখা যায় যে, চোর ব্রাহ্মণকে সতর্ক করে তার প্রাণ বাঁচাল, এবং ব্রহ্মদৈত্য চোরের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে দিয়ে চোরের হাত থেকে ব্রাহ্মণের গোরু দুটোকে রক্ষা করল।